- Sumash Tech
- 11 December, 2024
- How-to Guides, Customer Care Tips
স্মার্টফোনের সাধারণ সমস্যা ও সমাধান
বর্তমান স্মার্টফোন ব্যাবহার অনুপাতিক হারে অনেক বেশি। সেটা অ্যান্ড্রয়েড় হোক আর আইফোন। আবার সস্তা বা দামি যা-ই হোক ফোনের টুকটাক স্মার্টফোনের সাধারণ সমস্যা হতেই পারে।বর্তমানে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান স্মার্টফোন। এর বিকল্প চিন্তা করা যায় না। বেশিরভাগ মানুষই এখন অ্যানড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহার করে। তবে এই প্রয়োজনীয় গ্যাজেটিতে যখন সাধারণ কিছু সমস্যা দেখা দেয় তখন তা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অ্যানড্রয়েড ফোনের ৫ টি সাধারণ সমস্যা এবং সেগুলো সমাধান করার উপায় সম্পর্কে জানুন-
সে রকম কিছু সমস্যার ও সাধারণ সমাধান থাকছে এখানে
১. মোবাইল হ্যাং হওয়ার কারন ও সমাধান
বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিষ্টেমের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। কিন্তু মাঝে মাঝে এই প্রিয় অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা কিছু সমস্যায় ভুগি। সেই সব প্রাধান সমস্যার গুলির মধ্যে একটি হল মোবাইল হ্যাং হয়ে যাওয়া । কিছু পদ্ধতি আনুসরন করলে আমরা এর থেকে মুক্তি পেতে পারি। তার আগে চলুন জেনে নিই আমাদের মোবাইল কেন হ্যাং হয়।
মোবাইল হ্যাং হওয়ার কারনঃ
i. ১. অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল হ্যাং হয়ে যাওয়ার প্রাধান কারন দেখা গেছে এর মোবাইল স্পেস। অর্থাৎ আপনি যখন একই সময়ে অনেক গুলি আপ্লিকেশন ব্যবহার করেন তখন প্রয়োজনের তুলনায় মেমরি (RAM) কম হলে মোবাইল হ্যাং হতে পারে।
ii. যদি আমরা মেমোরি কার্ড (Memory card /External Memory) এর পরিবর্তে ফোন মেমরিতে (Internal Memory/ROM) যথেচ্ছ পরিমানে অ্যাপ্লিকেশন ইনষ্টল (Install) করি তবে রোম (ROM) এর ঘাটতির কারনে ফোন হ্যাং হতে পারে।
iii. যদি cookies, caches, log files. না পরিষ্কার করা হয়। তবে এগুলি মেমরি জ্যাম করে মোবাইল হ্যাং হওয়ার ক।রন হয়ে দাড়ায়।
iv. মোবাইল এর মেমরির তুলনায় ভারি অ্যাপলিকেশন, গেম চালালে মোবাইল হ্যাং হয়।
সমাধানঃ
i. কোন কিছু ইনষ্টল (Install ) করতে চাইলে চেষ্টা করুন মেমোরি কার্ডে ইনষ্টল (Install ) করার। অর্থাৎ ফোন মেমরিকে যতটা সম্ভব ফাঁকা রাখার।
ii. যে অ্যাপ গুলি ব্যবহার করেন না তা আনইনষ্টল(Uninstall) করেদিন।
iii. আপনার মোবাইল এর মেমরি (RAM) যদি কম থাকে তবে কখনই ভারি অ্যাপলিকেশন চালাবেন না।
iv. লক্ষ রাখুন একই সঙ্গে অনেক অ্যাপলিকেশন চলছে কিনা।
v. অ্যাপ বন্ধ করে মেমরি (RAM) ফাঁকা রাখতে “Advanced task killer”, “Easy task killer” ব্যবহার করতে পারেন।
২.ব্যাটারির চার্জ দ্রুত শেষ হওয়া
ব্যাটারি ড্রেন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা। কিন্তু এই সমস্যার মুল কারন হলো ফোনে অনেক গুলাে অ্যাপস একসাথে রানিং রাখা সারাক্ষন ফোনের ডাটা অন রাখা। এবং ফোনে লাইভ ওয়ালপেপার সেট করা,, আপনি যদি ব্যাটারির আয়ু বাড়াতে চান তবে এখানে কিছু টিপস দেওয়া হয়েছে।
সমাধান
i. আপনি আপনার ফোনের সেটিংসে আপনার ব্যাটারি ব্যবহার পরীক্ষা করুন এবং কোন অ্যাপগুলি বেশি ব্যাটারি ব্যবহার করছে তা দেখুন। যদি আপনি সাধারণত তাদের ব্যবহার না করে থাকেন তবে আপনি যেগুলি বেশি ব্যাটারি নিষ্কাশন করছে তা বন্ধ বা অক্ষম করতে রাখতে পারেন।
ii. ভারী অ্যাপ এবং গেম ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন
iii. উজ্জ্বলতার মাত্রা কমিয়ে ব্যবহার করুন।
৩. মোবাইল গরম হয়ে যাওয়া কারন ও তার সমাধান
i. সব ফোনই ব্যবহারজনিত কারণে একটু-আকটু গরম হয়। কিন্তু, যদি গরম হবার কারণে স্মার্টফোনটি হাতে ধরার অবস্থায় না থাকে তখন ব্যাপারটি সমস্যার। কেননা, ফোন হিটিং এর কারণে যেমন ব্যাটারির চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যায় কিংবা ব্যাটারি বিকল হয়ে যেতে পারে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে গুরুতর একটি ঝামেলা। তবে এর সমাধানও রয়েছে।
ii. আপনার ফোন কম দামি বলে বেশি গরম হয়, তা ঠিক নয়। স্বাভাবিকভাবে স্মার্টফোন ৩৫-৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত গরম হতে পারে। তবে স্ট্যান্ডবাই মোডেও যদি ফোনটি ৩৫-৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত গরম হয় তবে বুঝবেন আপনার ফোনে সমস্যা আছে।
iii. মোবাইল কোম্পানিগুলো বর্তমানে স্মার্টফোন দিন দিন পাতলা করছে। তবে তার তুলনায় ব্যাটারির প্রযুক্তি তেমন উন্নত হয়নি। ব্যাটারি যত বেশি দুর্বল হবে ফোন তত বেশি তাপ উৎপন্ন করবে। ব্যাটারি চার্জ নেয়ার সময় অথবা ডিচার্জ হওয়ার সময়ও ফোন বেশি গরম হয়।
iv. স্মার্টফোন গরম হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। অতিরিক্ত চার্জিং স্মার্টফোন গরম হওয়ার অন্যতম কারণ। দীর্ঘ সময় গেম খেললেও ফোন গরম হতে পারে। এ ছাড়া ম্যালওয়্যার প্রবেশ করলেও ফোন গরম হতে শুরু করে। ফোনের ডিসপ্লের ব্রাইটনেস বাড়িয়ে দিলেও গরম হতে পারে আপনার স্মার্টফোন। অনেক সময় দীর্ঘদিন ফোনে অ্যাপ ও অপারেটিং সিস্টেম আপডেট না করলেও এমন হতে পারে।
সমাধানঃ
i. প্রতিদিনের কিছু ভুল কাজ বড় ধরনের ক্ষতি করে ফোনের। চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার ভয়ে রাতদিন ডিভাইসকে চার্জে রাখেন অনেকে। যা ক্ষতি করে ডিভাইসের ব্যাটারির। শুধু ব্যাটারি নয়, অতিরিক্ত চার্জে নষ্ট হতে পারে মাদারবোর্ড। হুটহাট গরম অনুভূত হলে বুঝতে হবে সমস্যায় আছে ফোনটি। তাই সারাক্ষণ মোবাইল চার্জে না রাখাই ভালো।
ii. দীর্ঘ সময় ফোন ব্যবহারের কারণে ফোনের ব্যাটারি ও প্রসেসরের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে শুরু করে। সেই সময় ফোন গরম হতে শুরু করে। তাই ফোন ব্যবহারের নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিরতি নিলে ফোন গরম হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
iii. স্মার্টফোনে জাঙ্ক ফাইল ডিলিট করুন। অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলো জমতে থাকলে ফোন গরম হতে পারে। জাঙ্ক ফাইল ডিলিট করার জন্য গুগল ফাইলস গো অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।
iv. অনেক সময় ফোনে ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার প্রবেশ করার কারণে তা গরম হতে থাকে। সেক্ষেত্রে ফোন থেকে ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার দুর করতে অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেক সময় মেমোরিতে ফাইল জমতে থাকার কারণে গরম হয় ফোন। ফোন রিস্টার্ট করলে গরম হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
৪. ফোনের নেটওয়ার্কের সমস্যা কারন ও সমাধান
হঠাৎ হঠাৎ আপনার ফোনের নেটওয়ার্ক গায়েব! এই সমস্যায় মাঝেমধ্যে অনেকেই পড়েন। ফোনে নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটির সমস্যা হলে প্রথমেই টেলিকম অপারেটদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেই। কিন্তু, তার সমাধান যে ফোনের ভিতরেই লুকিয়ে রয়েছে, তা কি আমরা জানি? জেনে নিন ফোনে নেটওয়ার্ক না পেলে যা করবেন। আজ জুমবাংলার পাঠকদের এমন কিছু টিপস দেব, যা অনুসরণ করলে আপনারা সহজেই এ সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।
i. সিম কার্ড পরিষ্কার করার আগে প্রথমেই নিজের স্মার্টফোন সুইচ অফ করুন। তার জন্য পাওয়ার বাটন প্রেস করে অন্তত ১০ সেকেন্ড হোল্ড করুন। ফোন বন্ধ করার সঙ্গেই ফোনের সঙ্গে চার্জার কানেক্ট থাকলে, তাও খুলে ফেলুন।
ii. সাধারণত ফোনের বাঁ দিকে একটি ট্রের মধ্যে সিম কার্ড থাকে। একটি পিন ব্যবহার করে এই ট্রে ফোন থেকে বাইরে নিয়ে আসা যায়।
অনেক সময় ফোনের ব্যাটারির নিচে সিম কার্ড থাকে । সে ক্ষেত্রে ফোনের ব্যাক কভার ওপেন করে, ব্যাটারি খুললেই, সিম কার্ড দেখতে পাবেন।
iii. সিম কার্ড ট্রের পাশে একটি ছোট ছিদ্র দেখতে পাবেন। এই ছিদ্রের মধ্যে সিম ইজেক্টর পিন ব্যবহার করে ঠেললেই, সিম ট্রে ফোনের বাইরে চলে আসবে। এর পরে সেই ট্রে টেনে বাইরে নিয়ে এলে, তার মধ্যে সিম কার্ড দেখতে পাবেন।
iv. সিম কার্ড ফোন থেকে বেরিয়ে এলে তা পরিষ্কার করতে হবে। এই প্রতিবেদনে সিম কার্ড পরিষ্কারের মোট ছয়টি উপায় জানানো হয়েছে। ব্যাটারির নিচে সিম স্লট থাকলে গোল্ডেন কানেক্টরগুলোকে ভালো করে পরিষ্কার করুন।
v. একটি কাপড়ে ৯০-৯৯% ঘনত্বের রাবিং অ্যালকোহল নিয়ে তার সাহায্যে সিম কার্ড পরিষ্কার করুন। প্রথমে কাপড়টি অ্যালকোহলে সামান্য ভিজয়ে নিন। চপচপে করে ভেজাবেন না।
vi. আপনার কাছে কিছুই না থাকলে এক টুকরো শুকনো কাপড় দিয়ে সিম কার্ড পরিষ্কার করে নিন।
vii. সিম কার্ড পরিষ্কার করা হয়ে গেলে, তা ফের ফোনে ঢুকিয়ে নিন। সম্ভব হলে, সিম ঢোকানোর আগে ফোনের গোল্ডেন কানেক্টরগুলো পরিষ্কার করে নিন। ফোনে সিম ঢোকানোর পরে ফের পাওয়ার বাটন প্রেস করে ফোন অন করুন। সিম কার্ডের সমস্যা ঠিক হয়ে গেলে অভিনন্দন!
৫. ওয়াইফাই কানেক্ট না হওয়ার ও তা সমাধান
মাঝেমধ্যে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনটিকে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করতে সমস্যা হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে, অনেক ব্যবহারকারী এই সমস্যার সম্মুখীন হন। এমনকি আমাদের এন্ড্রয়েড ফোনে ইন্টারনেট থাকা সত্বেও ওয়াইফাই কানেক্ট করতে সমস্যা হয় এবং নো ইন্টারনেট কানেকশন দেখায়। আপনি যদি এই সমস্যাটি দূর করতে চান, তাহলে নিচের উপায়গুলো অবলম্বন করুন।
সমাধানঃ
i. আপনার মোবাইল এবং ইন্টারনেট রাউটার উভয়ই একবার বন্ধ করে পুনরায় চালু করুন।অথবা আপনার ফোন কে এক মিনিট এরােপ্লেন মুডে রেখে আবার ওয়াইফাই কানেক্ট করে দেখেন।
ii. যদি এরপরেও ঠিকমত কাজ না করে বা সমস্যা সমাধান না হয় তাহলে আপনার মোবাইলের ওয়াইফাই এর সেটিং অপশনে মেনু সিলেক্ট করুন। এরপর এডভান্সড অপশনে গিয়ে “স্টে কানেক্ট টু ওয়াইফাই” অপশনে ক্লিক করুন, কানেকশন পেয়ে যাবেন।
iii. আপনি কমপক্ষে ১ মিনিটের জন্য এরােপ্লেন মোড একটিভ রাখুন। তারপরে, আবার সংযোগ করার চেষ্টা করুন।
iv. মাঝে মাঝে, আপনার ওয়াইফাই সিস্টেম টি বন্ধ ও চালু করতে পারেন এবং তারপরে আপনার ফোন টি আবার সংযোগ করার চেষ্টা করুন।